আজ ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাংবাদিকের ওপর হামলায় কৃষকলীগ নেতা আরমানের বিরুদ্ধে মামলা

রুপসা প্রতিনিধি : খুলনার রূপসা উপজেলার সাংবাদিক মাসুম সরদারের ওপরে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার(৬ মে) সকালে ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক বাদি হয়ে খুলনা সদর থানায় চার জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। তবে আসামীরা এলাকার চিন্হিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হওয়ায় মামলা করেও নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন তিনি।

মামলার অভিযুক্তরা হচ্ছেন রূপসার রাজাপুর এলাকার পান্নু মিয়ার ছেলে ওহিদুজ্জামান আরমান মিয়া(৩৫), আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে রানা(৩৪), আইচগাতি ঠান্ডার বাগান এলাকার কালাম সরদারের ছেলে আলাউদ্দিন(৩৫) ও দেয়াড়া তেঁতুলতলা এলাকার নুর ইসলামের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন(৩৬)। এছাড়া আরও চার জনকে অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদী মাসুম সরদার একজন গণমাধ্যমকর্মী। তিনি ইবি নিউজ ৬৪ ডটকম নামের একটি অনলাইন পত্রিকার প্রকাশকের দায়িত্বে আছেন। সাম্প্রতি হামলাকারীদের একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মামলা হলে সেই বরাত দিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করেন। পরে ওই সন্ত্রাসীরা সংবাদ প্রকাশের জেরে গত শনিবার (৪ মে) বিকালে খুলনার কালীবাড়ি ঘাটের সামনে পরিকল্পিত ভাবে হামলা করে। এসময় ভুক্তভোগীকে মারধোর করে পকেটে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়, সাথে থাকা মোবাইল ও ক্যামেরা নদীতে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। হামলাকারীরা মারধোরের ভিডিও করে পরবর্তীতে সেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।

জানা যায়, মামলার ১ নং আসামি ওহিদুজ্জামান আরমান মিয়া রূপসা উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। একসময় তিনি ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করতেন। তবে সময়ের পালাবদলে রাজনৈতিক নেতৃত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হামলার অভিযোগ রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারী মাসের ২৪ তারিখ রাজাপুর এলাকার যুবলীগ নেতা আয়ানকে কুপিয়ে জখমের মামলার তিন নাম্বার আসামি এই ওহিদুজ্জামান আরমান। ওই মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন। গত মাসে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার নিরীহ মানুষেরা।

মামলার ২ নং আসামি আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে রানা বিভিন্ন অপকর্মের সাথে যুক্ত রয়েছেন। তিনি ওহিদুজ্জামান আরমানের নান অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে ভুমিকা রাখেন। রাজাপুরের যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার মামলায় তিনি প্রধান আসামি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দেয়াড়া এলাকার মনিরা বেগম নামের এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার প্রধান আসামি।

হামলা ও মামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাসুম সরদার বলেন, গত ফেব্রুয়ারী মাসের ২৪ তারিখ উপজেলার রাজাপুর এলাকার যুবলীগ নেতা আয়ানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। সেই হামলার ঘটনায় আসামী ছিলেন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেওয়া ওহিদুজ্জামান আরমান মিয়া। পেশাগত দায়িত্ব পালনে যুবলীগ নেতার করা মামলার বরাত দিয়ে আসামীদের নাম প্রকাশ করে সংবাদ প্রকাশ করি। এই ঘটনার ক্ষুব্ধ ছিলো আসামীরা। গত ৫ ই মার্চ হাইকোর্টের বিজ্ঞ আদালত জামিন পেয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার ওপরে হামলা করা হয়। আজ সকালে সদর থানায় মামলা হয়েছে। আমি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ যত দ্রুত সম্ভব আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য।

সাংবাদিক মাসুম সরদারকে মারধোরের ভিডিও ওহিদুজ্জামান আরমান তার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করলে উপজেলায় আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়। উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। উপজেলােপ্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দরা রাজনৈতিক পদবিধারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে গড়িমসি হলে মানবন্ধন সহ কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ